ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন আমদানিশুল্ক চীনা রপ্তানিকারকদের জন্য বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুল্ক হার ১০৪ শতাংশে পৌঁছানোর পর চীন সরকার এর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়েছে। চায়না ডেইলি এক সম্পাদকীয়তে বলেছে, “বৈশ্বিক ঐক্যই পারে এই বাণিজ্যিক নিপীড়নকে হারাতে।” চীন এশিয়ান অর্থনীতির সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে মুক্ত বাণিজ্য রক্ষায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “চীন এই ধরনের শুল্ক ব্যবস্থা মেনে নেবে না।” এই পরিস্থিতি চীনের জন্য আরো বড় সংকট তৈরি করেছে, কারণ দেশের অভ্যন্তরীণ ভোক্তা ব্যয় কমেছে এবং রপ্তানি খাত এখনো অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। নতুন শুল্ক চীনা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে, যাদের মুনাফার মার্জিন দ্রুত কমে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই শুল্ক পদক্ষেপ শুধু চীনা কোম্পানিগুলোকেই নয়, সেইসাথে এমন দেশগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যারা চীনে তাদের উৎপাদন ভিত্তি সরিয়েছে, যেমন ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া। উদাহরণস্বরূপ, ইন্দোনেশিয়ায় আমদানির শুল্ক হার ৩২ শতাংশে পৌঁছেছে।
চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশভিত্তিক একটি ডিসপোজেবল টেব্লওয়্যার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা নতুন কারখানা চালু করেও মার্কিন শুল্কের কারণে সমস্যার সমাধান পাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালের আয়ের দুই-তৃতীয়াংশ মার্কিন বাজার থেকে আসে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি বড় অংশ রপ্তানি খাত থেকে এসেছে, এবং এই নতুন শুল্ক প্রবৃদ্ধিকে বড় আঘাত দেবে। এর ফলে চীনকে অভ্যন্তরীণ চাহিদাভিত্তিক অর্থনীতির দিকে ঠেলে দেয়া হতে পারে, তবে এ পরিবর্তন সহজ হবে না।
এদিকে, চীন পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে হলিউড সিনেমার আমদানি নিষিদ্ধ করার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফেন্টানিল বিষয়ক সহযোগিতা স্থগিত করার কথা ভাবছে। তবে, এসব পদক্ষেপ চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য খুব বেশি কার্যকরী প্রমাণ হচ্ছে না।